চকরিয়ায় কিশোর গ্যাং লিডার ও অপহরণ চেষ্টা মামলার পরোয়ানাভূক্ত আসামী মোঃ আরফাত (২২) কে গ্রেফতার করেছে চকরিয়া থানা পুলিশ। গতকাল ২১ই মার্চ (মঙ্গলবার) দুপুর ১২টার দিকে চকরিয়া থানার এএসআই উত্তম কুমার ভৌমিকের নেতৃত্বে সঙ্গীয় পুলিশ সদস্যরা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের অলিশাহ বাজার সংলগ্ন ৪নং ওয়ার্ড এলাকা থেকে ধাওয়া করে তাকে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারকৃত আসামী মোহাম্মদ আরাফাত উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের উত্তর ঘূণিয়া ৪ নং ওয়ার্ড এলাকার মৃত কবির আহমদের ছেলে ও ফাঁসিয়াখালী ইউপির ৪নং ওয়ার্ডের বর্তমান এমইউপি তৌহিদুল ইসলাম তুহিনের ছোট ভাই বলে জানা গেছে। পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ১৪ অক্টোবর রাত পৌনে আটটার দিকে চকরিয়া পৌরশহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের জনতা মার্কেটস্থ পুরাতন বাস টার্মিনাল এলাকায় কিশোর গ্যাং লিডার আরাফাতের নেতৃত্বে ৪-৫ জনের একটি কিশোর গ্যাং চক্র কুষ্টিয়ার দৌলতপুর তারাবনিয়া এলাকার মনিরুজ্জামান নামের এক ব্যবসায়ীকে হানিফ পরিবহনের টিকেট কাউন্টার থেকে সন্ত্রাসী কায়দায় দেশীয় তৈরি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অতর্কিতভাবে আক্রমণ করে এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন পূর্বক জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে ঝাপটা মেরে তার বাম হাতে থাকা ১টি স্মার্ট মোবাইল ফোন, নগদ টাকা এবং তার বাম কাধে থাকা চামড়ার ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। পরে মনিরুজ্জামানের সৌরচিৎকারে আরফাতের নেতৃত্বে থাকা অপরাপর কিশোর গ্যাং চক্রের সদস্যরা তাকে মারধর করে এবং জোরপূর্বক একটি অজ্ঞাত নম্বরের গাড়িতে উঠানোর চেষ্টাকালে স্টেশনে থাকা লোকজন এগিয়ে আসলে কিশোর গ্যাং লিডার আরাফাতসহ আরো ৩ জন পালিয়ে গেলেও ১জনকে আটক করে থানায় সোপর্দ করা হয়। পরে ভুক্তভোগী মো. মনিরুজ্জামান বাদী হয়ে চকরিয়া থানায় দ্রুত বিচার আইনে একটি অপহর চেষ্টা মামলা দায়ের করেন। এবং সেই মামলার ৩ নং আসামী ছিলেন গ্রেফতারকৃত কিশোর গ্যাং লিডার আরফাত। এদিকে, এ ঘটনার সময় সাংবাদিকদের মুঠোফোনে ধারণ করা একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিলে তা মূহুর্তেই ভাইরাল হয় এবং এ ঘটনায় জড়িতদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে সাংবাদিকরা সংবাদ পরিবেশন করলে কিশোর গ্যাং লিডার আরাফাত তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সাংবাদিকদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে এবং এমনকি সাংবাদিকদের প্রকাশ্যে মারধরের হুমকিও প্রদর্শন করেন।অন্যদিকে, কিশোর গ্যাং লিডার ও অপহরণচেষ্টা মামলার পরোয়ানাভূক্ত আসামী মোহাম্মদ আরাফাত গ্রেফতার হওয়ার পর তার নিজ এলাকার স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা যায়, আরাফাতের অপকর্মে ফাঁসিয়াখালীসহ আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কিত। রাজনৈতিক দলের নেতাদের ছত্রছায়ায় গড়ে উঠেছে আরাফাতের অপরাধ সাম্রাজ্য। বিশেষ করে চকরিয়া পৌরশহরের শহীদ আবদুল হামিদ পৌর বাসটার্মিনাল থেকে জনতা মার্কেট পুরাতন বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত আশপাশের এলাকায় অহরহ ঘটিয়েছে ছিনতাই ও অপহরণ চেষ্টার মতো নিন্দনীয় ঘটনা। তবে, তার ভাই তৌহিদুল ইসলাম তুহিন ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডে এমইউপি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই সে খুব বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলো। অপরদিকে, গ্রেফতারের বিষয়ে চকরিয়া থানার এএসআই উত্তম কুমার ভৌমিকের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, মোঃ আরফাতের বিরুদ্ধে অপহরণ চেষ্টার দায়ে দ্রুত বিচার আইনের ১টি মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি হয়। পরে গতকাল ১২টার দিকে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের অলিশাহ বাজার নামক স্থান থেকে তাকে ধাওয়া করে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর থানায় নিয়ে আসা হয় এবং একইদিন বিকাল ৩টার দিকে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।