কক্সবাজার জেলায় ডিমের দাম নির্ধারণের ক্ষমতা একজন ব্যক্তির হাতে কেন্দ্রীভূত হওয়ায় কৃষক ও ভোক্তা উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। জানা যায়, এখানকার খামারি ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা কে কত টাকায় ডিম বিক্রি করবেন তা আগের দিন মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে নির্ধারণ করে দেন একজন ব্যক্তি। তার নির্ধারিত মূল্যের বাইরে ডিম বিক্রির কোনো সুযোগ নেই। এমনকি, কোনো পাইকারি বা খুচরা বিক্রেতা ইচ্ছে করলে সরাসরি খামারির কাছ থেকে ডিম ক্রয় করার সুযোগও পাচ্ছেন না। কারণ খামারিরা কোনোভাবেই ওই ব্যক্তির বাইরে অন্য কাউকে ডিম বিক্রি করতে রাজি হচ্ছেন না। এই একক ব্যক্তির একচ্ছত্র কর্তৃত্বের কারণে ডিমের বাজারে স্বচ্ছতা নেই এবং ভোক্তাদের কাছে ডিমের দাম বেশি পড়ছে। কক্সবাজার জেলার ডিমের বাজারে একক আধিপত্য বিস্তার করেছেন ঈদগাঁও উপজেলার লেয়ার খামার মালিক সমিতির নেতা খাইরুল বশর। তিনি সরাসরি স্বীকার করেছেন যে, তিনিই জেলার ডিমের দাম নির্ধারণ করেন। খাইরুল বশর জানিয়েছেন, চট্টগ্রামের ডিমের সিন্ডিকেটের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে তিনি কক্সবাজারে ডিমের দাম নির্ধারণ করেন। তার এই একক আধিপত্যের কারণে সাধারণ ভোক্তারা অতিরিক্ত দামে ডিম কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জেলার শতাধিক খামারের নিয়ন্ত্রক খাইরুল বশর হলেও এই সিন্ডিকেটে ১৮৪ জন সদস্য জড়িত। এই সিন্ডিকেটের কর্মকাণ্ড কক্সবাজার জেলা ছাড়িয়ে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া, সাতকানিয়া এবং বান্দরবনের একটি অংশ পর্যন্ত বিস্তৃত। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খামারিরা ডিম বিক্রি করছেন সবচেয়ে কম দামে। কিন্তু খুচরা ক্রেতাদের কাছে পৌঁছালে ডিমের দাম অনেক বেড়ে যাচ্ছে। খুচরা দোকানে ডিম বিক্রি হচ্ছে পিস ১৪ থেকে ১৫ টাকায়। কিন্তু পাইকারি ক্রেতারা এসব ডিম কিনছেন সাড়ে ১১ থেকে সাড়ে ১২ টাকায়। এই দামের পার্থক্যের কারণ হিসেবে সিন্ডিকেটের অস্তিত্বই সামনে এসেছে। প্রশ্ন উঠছে, খামারিরা যদি কম দামে ডিম বিক্রি করেন, তাহলে কেন খুচরা ক্রেতাদের কাছে ডিমের দাম এত বেশি? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়েই ডিম সিন্ডিকেটের কারসাজির বিষয়টি সামনে এসেছে। ঈদগাঁও উপজেলার ডিমের বাজারে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট কাজ করছে। চাষী ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা এই সিন্ডিকেটের নিয়ম অনুযায়ী কাজ করতে বাধ্য। ফলে দাম বাড়ানো এবং উভয় পক্ষের লাভ কমে যাচ্ছে। সিন্ডিকেট নেতা খাইরুল বশর প্রতিদিন মোবাইল ম্যাসেজ পাঠিয়ে চাষীদের ডিমের দাম নির্ধারণ করে দেন।