ড.শফিকুর রহমান বলেন, বন্যহাতির প্রাকৃতিক চলাচলের পথ, খাবার ও পানির উৎস রক্ষায় গহিন বনের প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ, হাতির নিরাপত্তা, অভয়ারণ্যসহ পর্যাপ্ত খাদ্য শৃঙ্খল গড়ে তুলতে হবে। নয়তো হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব বাড়বে।কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফুলছড়ি রেঞ্জের আওতাধীন খুটাখালী বনবিটের সেগুন বাগিচা এলাকায় ফাঁদ পেতে হাতি হত্যা বন্ধ করতে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে বনবিভাগ।চকরিয়া উপজেলার খুটাখালীর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড সেগুন বাগিচায় মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) সকাল ১১ টার দিকে ‘হাতি মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসন’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের উদ্যোগে, নেকম’র সহযোগিতায় আয়োজিত এ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ন্যাচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্ট (নেকম) ডিপিড ড. শফিকুর রহমান।তিনি বলেন, কক্সবাজারের বিভিন্ন উপজেলায় ফাঁদ পেতে বা গুলি করে হাতি হত্যা করা হয়েছে। অথচ সরকার হাতির আক্রমণে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করে। সংরক্ষিত বনাঞ্চল এলাকায় সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ। পাহাড়ি বনাঞ্চলে বাড়িঘর ঠেকানো গেলে বন্যপ্রাণীদের নিরাপদ আবাসস্থল হিসেবে গড়ে তোলা যাব।তিনি আরও বলেন, বন্যহাতির প্রাকৃতিক চলাচলের পথ, খাবার ও পানির উৎস রক্ষায় গহিন বনের প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ, হাতির নিরাপত্তা, অভয়ারণ্যসহ পর্যাপ্ত খাদ্য শৃঙ্খল গড়ে তুলতে হবে। নয়তো হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব বাড়বে।নেকম সাইট অফিসার সিরাজুম মনিরের সঞ্চালনায়বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাখেন ফুলছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা হুমায়ুন আহমেদ বলেন, হাতি-মানুষ দ্বন্দ্ব চিরতরে বন্ধ করা হবে। কোন অবস্থায় হাতি মারা যাবে না। হাতি হত্যা একটি অপরাধ, অথচ সেখানে বিদ্যুতের লাইন দিয়ে হাতি মারা হচ্ছে। এটা ডাবল অপরাধ। হাতির খাবার আমরা মানুষরা বন্ধ করে দিয়েছিতিনি আরও বলেন, হাতির কারণে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের সরকার ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে। হাতি মারলে বহির্বিশ্বে আমাদের সম্মানহানি হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ দেশ ও জাতির সম্মানহানী হচ্ছে। তাই সবাইকে সচেতন হতে হবে।শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে খুটাখালী বিট কর্মকর্তামোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বন্যহাতির আবাস স্থলেমানুষের বসবাস গড়ে উঠায় প্রতিবছর খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে নেমে আসা বুনো হাতির দল লোকালয় নেমে আসে গ্রামবাসীর ফসল ও জানমালেরক্ষয়ক্ষতি করছে। হাতির আবাসস্থল না থাকায় মূলত এর প্রধান কারণ।ইতিমধ্যে বন বিভাগ হাতি মানুষ দ্বন্দ্ব নিরসনে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় খুটাখালী ফরেস্ট বিট এলাকায় আমরা কাজ শুরু করেছি। মতবিনিময় সভায় হাতি সংরক্ষণ ও হাতির অবাধ বিচরণের বিষয়ে সকলের সহযোগিতা কামনা করা হয়।সভায় সভাপতিত্ব করেন মেদাকচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যান সহ ব্যবস্থাপনা কমিটির কোষাধ্যক্ষ আকতার কামাল।এসময় অন্যন্যদের মধ্যে নেকম এনআরএম ম্যানেজার আবদুল কায়ুম, স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার নুর মোহাম্মদ পেটান মুন্সি, সাংবাদিক সেলিম উদ্দীন, সাবেক নারী ইউপি সদস্য ছালেহা পারভিন, হেডম্যান ছৈয়দুল হক, ব্যবসায়ী শামসুল আলম ও ইআরটি সদস্য নুর হোসেন বাবুল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।