লক্ষ্মীপুরে ইটভাটায় এক যুবককে শিকলে বেঁধে নির্যাতন ও তার স্ত্রীকে (১৮) সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) দুপুরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল করে ভুক্তভোগী নারী এ অভিযোগ করেন। বিকালে তিনি সদর মডেল থানায় উপস্থিত হয়ে ওসি মোসলেহ উদ্দিনকে ঘটনাটি জানিয়েছেন।৯৯৯ নম্বরে অভিযোগ পেয়ে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল সদর উপজেলার চররমনী মোহন ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর চররমনী গ্রামের বনফুল ব্রিকস অ্যান্ড কোম্পানিতে (বিবিসি) অভিযানে যায়।নির্যাতনের শিকার নারীর স্বামী ভোলার বাসিন্দা। তাদের সংসারে আড়াই বছরের একটি শিশু সন্তান রয়েছে। তারা চট্টগ্রাম আজিমপাড়ায় থাকেন। প্রায় ৩ মাস আগে ইটভাটাতে শ্রমিক হিসেবে কাজের জন্য উত্তর চররমনী গ্রামের বিবিসি ইটভাটাতে আসে। ইটভাটার পাশে তারা একটি ঘর ভাড়া নিয়ে বসবাস করেন।নির্যাতিতদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নির্যাতনের শিকার যুবক চট্টগ্রামে আজিমপাড়া এলাকায় দিনমজুর হিসেবে কাজ করতেন। সম্পর্কীয় একজনের সঙ্গে ৩ মাস আগে সে লক্ষ্মীপুরে ইটভাটায় কাজ করতে আসে। তিনদিন আগে ওই লোক পালিয়ে যায়। এতে মঙ্গলবার ইটভাটায় আসলে জামাল মাঝি, নিজাম মাঝি ও দিনাজ তার কাছ থেকে ওই লোকটির সন্ধান দিতে বলে। এতে ব্যর্থ হওয়ায় তারা শাকিলকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে। দীর্ঘসময় ধরে ঘরে না ফেরায় স্বামীকে খুঁজতে ইটভাটায় যার তার স্ত্রী। এরপর তার স্বামীর কাছে টাকা পাবে বলে জানায় ইটভাটা কর্তৃপক্ষ।এছাড়া টাকা না দিতে পারলে তাদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য কুপ্রস্তাব দেওয়া হয়। পরে তিনি বাসায় চলে যান। এরপর গভীর রাতে জামাল মাঝি, নিজাম মাঝি ও দিনাজ ঘরে ঢুকে জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এরপর তিনজন করে আরও ৬ জন গিয়ে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে। একপর্যায়ে তার ডান হাতে সিগারেট আগুন লাগিয়ে ছ্যাঁকা দেয় বলে অভিযোগ করেছেন ওই নারী।নির্যাতনের শিকার নারী বলেন, আমরা অগ্রিম কোনো টাকা নিইনি। তবুও তারা আমার স্বামীকে বেঁধে রেখে নির্যাতন করেছে। আমি ছাড়াতে গেলে তারা আমার সঙ্গে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক (ধর্ষণ) করে। নিরুপায় হয়ে ৯৯৯ এ কল দিয়ে পুলিশকে ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় সাংবাদিকদের জানায়।অভিযুক্ত জামাল মাঝি সাংবাদিকদের বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে। আমি কিছুই জানি না।বিবিসি ব্রিকসের সত্ত্বাধিকারী বাহার উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। আমি ঢাকায় আছি। বিস্তারিত বলতে পারছি না।লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ওসি মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ভুক্তভোগী নারীর কাছ থেকে ঘটনা শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তারা আসলে বিস্তারিত জানা যাবে।