প্রেমের টানে জার্মানি থেকে এক তরুণী এসেছেন বাংলাদেশে। ওই তরুণীর নাম জেনিফার স্ট্রায়াস। জার্মানির বাইলেফেল্ড স্টেটের জোসেফ স্ট্রায়াস ও এসাবেলা স্ট্রায়াস দম্পতির কন্যা জেনিফার। জেনিফার বাইলেফেল্ড স্টেটের একটি স্কুলে মাধ্যমিক লেভেলে লেখাপড়া করছেন।গত শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশে আসেন ওই তরুণী। আর গতকাল রবিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গোপালগঞ্জ আদালতে অ্যাফিডেভিটের মাধ্যমে বিয়ে করেছেন গোপালগঞ্জের জেলার কাশিয়ানী উপজেলার যোতকুরা গ্রামের চয়ন ইসলামকে। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ভিনদেশি গৃহবধূকে দেখতে চয়নের বাড়িতে ভিড় করছেন এলাকার মানুষ।চয়নের পরিবার জানায়, চয়নের বাবা রবিউল ইসলাম ইতালি প্রবাসী। চয়ন তার বাবার মাধ্যমে ফ্যামিলি ভিসায় ২০১৬ সালের অক্টোবরে পাড়ি জমান ইতালিতে। সেখানে কিছুদিন থাকার পরে ওই বছরের নভেম্বর মাসে চলে যান জার্মানিতে। জার্মানিতে গিয়ে একটি ভাষা শিক্ষা কোর্সে ভর্তি হন চয়ন। ভাষা শিক্ষা শেষে চাকরি শুরু করেন। পরে ২০১৮ সালে একটি স্কুলে ভর্তি হলে সেখানেই পরিচয় হয় জেনিফারের সঙ্গে। একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। তাঁদের সম্পর্কের কথা উভয়ের পরিবার যানতে পারে এবং তা সাদরে গ্রহণ করে।২০২২ সালে চাকরি ছেড়ে দিয়ে ওই বছরের ১০ মার্চ বাংলাদেশে ফিরে আসেন চয়ন। দেশে আসলেও জেনিফারের সঙ্গে চয়নের যোগাযোগ অব্যাহত থাকে। অবশেষে গত শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশে চলে আসেন জেনিফার। শুক্রবার রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে এসে জেনিফার নামলে বিমানবন্দরের বাইরে প্রেমিক চয়ন ও তাঁর পরিবার জেনিফারকে স্বাগত জানায়।ওই রাতেই গাড়িযোগে জেনিফারকে নিয়ে গোপালগঞ্জ শহরে চলে আসা হয়। শহরের মডেল স্কুল রোডের ফুপাতো ভাই আব্দুর রহমানের বাড়িতে রাত্রি যাপনের জন্য গেলে তারা ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানায় জেনিফারকে। এরপরে দুই পরিবারের সম্মতিতে গতকাল রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গোপালগঞ্জ আদালতে অ্যাফিডেভিটের মাধ্যমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তাঁরা।জেনিফার তাঁর অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, ‘জার্মানিতে এক স্কুলে পড়া অবস্থায় চয়নকে ভালোবাসি। আমি বাংলাদেশে চয়নের কাছে চলে এসেছি। আমার ও চয়নের পরিবারের সবাই সম্মতি দিয়েছে বিয়েতে। আমি ও আমার পরিবারের সবাই খুব খুশি। এখানকার পরিবেশ, আতিথেয়তা ও সবার ভালোবাসা আমাকে মুগ্ধ করেছে। পরিবারের সবাই আমাকে আপন করে নিয়েছে।জানতে চাইলে চয়ন ইসলাম বলেন, ‘আমি জার্মানিতে পড়াশোনা করার সময় জেনিফারের সঙ্গে পরিচয় হয়। পরিচয় থেকে ভালোবাসা হয়। দীর্ঘ ৫ বছরের সম্পর্ক আমাদের মাঝে। আমি একটি চাকরি করতাম। সেখানে মালিকের সঙ্গে মনোমালিন্য হলে চাকরি ছেড়ে বাংলাদেশে চলে আসি। আমার ভালোবাসার টানে জেনিফার বাংলাদেশে চলে এসেছে। আমরা বিয়ে করেছি, এতে আমার ও জেনিফার পরিবারের সবাই খুব খুশি।