চকরিয়াSunday , 19 May 2024
  1. Lead Post
  2. অর্থনীতি
  3. আইন আদালত
  4. আজব খবর
  5. আন্তর্জাতিক
  6. আলোকিত চকোরিয়া
  7. আলোকিত বন্ধু সমাবেশ
  8. আলোকিত বাংলাদেশ
  9. আলোকিত বিজ্ঞাপন
  10. আলোকিত মানুষ
  11. আলোকিত শিশু
  12. আলোকিত সংবাদ
  13. আলোকিত সাময়িকী
  14. ইসলাম ও ধর্ম
  15. কক্সবাজার
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বাবর আলী এভারেস্টের চূড়ায়

Link Copied!

বিশ্বের উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্টের শিখরে সফল আরোহণকারীদের তালিকায় এগারো বছর পর আরেকজন বাংলাদেশি হিসেবে নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন বাবর আলী। আজ রবিবার (১৯ মে) সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ তিনি ‘সামিট’ করেছেন। তার এই সামিটের অর্থের বড় একটি অংশ এসেছে ‘ক্রাউন্ডফান্ডিং’ এর মাধ্যমে।রবিবার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে অভিযানের প্রধান সমন্বয়ক ফারহান জামান এই তথ্য নিশ্চিত করেন।এভাবে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু এই পর্বতের ২৯ হাজার ৩১ ফুট শিখরে বাংলাদেশের পতাকা ওড়ানো ষষ্ঠ ব্যক্তি হলেন তিনি।এভারেস্টে আরোহণ বেশ ব্যয়বহুল এবং এজন্য মাসের পর মাস যে শারীরিক প্রশিক্ষণের প্রয়োজন, তাতেও প্রচুর টাকা খরচ হতে পারে।বাবর আলীর শুধুমাত্র পর্বতারোহণ অভিযানে মোট খরচ হয়েছে প্রায় ৪৫ লাখ টাকার মতো। যার একটি বড় পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছে ক্রাউডফান্ডিং এর মাধ্যমে।ক্রাউডফান্ডিং হল কোন একটি কাজের ব্যয় নির্বাহের জন্য বা তহবিল গঠনের জন্য অর্থ সংগ্রহের একটি উপায়।অনেকেই অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বা বিভিন্ন ইভেন্ট আয়োজনের মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক মানুষের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে থাকে।অভিযানের প্রধান সমন্বয়ক এবং বাবর আলীর বিভিন্ন পর্বতারোহণের সঙ্গী ফারহান জামান জানান, বাংলাদেশে বাবর আলীই প্রথম যিনি ক্রাউডফান্ডিং-এর মাধ্যমে এভারেস্ট জয় করেছেন।তারা মূলত তিনটি উপায়ে এই ক্রাউডফান্ডিং করেছেন বলে জানান। প্রথমত তারা অনলাইনে একটি ইভেন্ট খোলার মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করেন।মি. জামান বলেন, “আমরা প্রথমে আমাদের পর্বতারোহণের গ্রুপ ভার্টিক্যাল ড্রিমার্সে একটা ইভেন্ট খুলে ডিক্লারেশন ছাড়ি যে বাবর আলী এভারেস্টে উঠবেন। এজন্য ফান্ড দরকার। আমরা বাবরের একটা শর্ট ফিল্ম বানিয়ে ইভেন্টটা তৈরি করেছিলাম।দ্বিতীয়ত তারা যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ক্রাউডফান্ডিং প্ল্যাটফর্ম ‘গোফান্ডমি’-রও সাহায্য নিয়েছেন।মি. জামান জানান তাদেরই পরিচিত একজন গোফান্ডমি প্রচারণায় বাবর আলীর অভিযানে সহায়তা দিতে একটি লিংক তৈরি করেন। এতে করে দেশের বাইরে থাকা অনেক বাংলাদেশি ওই লিংকের মাধ্যমে তহবিল দেন।তৃতীয়ত তারা মেডেল বিক্রি করে ফান্ড সংগ্রহ করেন। বিভিন্ন রানিং ইভেন্ট বা দৌড় প্রতিযোগিতায় আয়োজকদের কাছে অনেক মেডেল থাকে। যেগুলো ইভেন্টের পর আর ব্যবহার হয় না।তারা এসব ইভেন্ট আয়োজকদের সাথে যোগাযোগ করে মেডেলগুলো সংগ্রহ করেন এবং অনলাইনে বিক্রি করেন।সেই সাথে দেশ বিদেশের নানা সামাজিক ও ক্রীড়া সংগঠনও তাদের সহায়তা দিয়েছে। তাছাড়া বাবর আলীর নিজের জমানো এবং কিছু ধারদেনা করা টাকাও খরচ করা হয়।“অনেক টাকা বন্ধুবান্ধবদের থেকে ব্যক্তিগতভাবে ধার করে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে বাবরই প্রথম ক্রাউডফান্ডিং এর মাধ্যমে এভারেস্ট জয় করেছে। আগে সব কর্পোরেট স্পন্সর ছিল”, বলছিলেন ফারহান জামান।তবে বাবর আলীর এই অভিযানেও সবচেয়ে বড় পরিমাণে অর্থায়ন এসেছে সাতটি কোম্পানির স্পন্সরশিপ থেকে।যদিও এর মধ্যে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান একটিও নেই।মূলত যেসব প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা নিজে পর্বতারোহণ করেন বা পর্বতারোহণের বিষয়ে আগ্রহ রাখেন তারাই এগিয়ে এসেছেন বলে জানান মি. জামান।তিনি বলেন, “আমরা এমন কোনও বড় কোম্পানি নেই যাদেরকে নক করিনি। মালিক থেকে পিওন পর্যন্ত সব জায়গায় চেষ্টা করে দেখেছি। কিন্তু কোনও সাড়া পাইনি। তারা ভাবে যে ঘুরতে যাচ্ছে। তা ছাড়া নির্বাচনের পর পরই বড় কোম্পানিগুলোর পক্ষে ফান্ড দেয়াটা হয়তো কঠিন।”এভারেস্ট আরোহণ আসলেই বেশ ব্যয়বহুল। এ অভিযানের জন্য একজন ব্যক্তির ন্যূনতম ২৫ লাখ টাকা থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অংকের খরচটি হয় নেপাল সরকারের রয়্যালটি ফি বাবদ। মি জামান জানান, এভারেস্টে উঠতে জনপ্রতি ১২ হাজার ডলার রয়্যালটি ফি নেপাল সরকারকে দিতে হয়।এই টাকার বিনিময়ে ক্লাইম্বিং পারমিট অর্থাৎ পর্বত আরোহণের অনুমোদন পাওয়া যায়। এর বাইরে বাড়তি কোন সেবা পাওয়া যায় না।নেপাল সরকার শুধুমাত্র পর্বতারোহীর নাম আনুষ্ঠানিকভাবে নথিভুক্ত রাখেন। চূড়ায় আরোহণ করতে পারলে তারা সেটা ঘোষণা করেন।সেইসাথে বোতলজাত অক্সিজেন এবং হাই অল্টিটিউড গিয়ারের জন্য একটি বড় অংক বিনিয়োগ করতে হয়।সেইসাথে তাঁবু, স্লিপিং ব্যাগ, জ্যাকেট, বুট, থাকা খাওয়া, শেরপার ফি – সব মিলিয়ে অনেক বড় অংকের টাকা খরচ হয়ে যায়।তবে এভারেস্ট আরোহণের সামগ্রিক আয়োজন এবং লেনদেনের সব কাজ মূলত এজেন্সিরাই করে থাকে। এরা অনেকটা ট্রাভেল এজেন্সির মতো।মি. জামান জানান, এজেন্সিগুলো নেপাল সরকারের অনুমোদন নেওয়া থেকে শুরু করে পর্বতে উঠে নেমে আসা পর্যন্ত সব ধরনের সেবা দিয়ে থাকে।এজন্য তাদেরকে এককালীন সব মূল্য পরিশোধ করে দিতে হয়।“আপনি শুধু বাংলাদেশ থেকে কাঠমুন্ডু যাবেন, তারপর আপনাকে হোটেলে নেওয়া থেকে শুরু করে বাংলাদেশে ফেরার আগ পর্যন্ত পর্বতারোহণের বাকি সব প্রক্রিয়া এজেন্সি সম্পন্ন করে থাকে।এভারেস্ট অভিযাত্রায় নেপালে বিভিন্ন ধরনের এজেন্সি কাজ করে যাদের একেক জনের খরচ একেক রকম।“আমরা সবচেয়ে কম দামি এজেন্সি ধরে গিয়েছি। ভালো এজেন্সিগুলোর ফি আরও ১৫/২০ লাখ টাকা বেশি। ওখানে ফেসিলিটিজও বেশি।“দামিগুলোয় গেলে বাবরের শিখরে ওঠার ছবি ও ভিডিও খুব দ্রুত পেয়ে যেতাম। তার সাথে দুজন শেরপা থাকতো। বেজ ক্যাম্পে খাট পেতো। আমরা গিয়েছি ধারদেনা করে। পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে আমাদের সস্তা অপশন বেছে নিতে হয়েছে”, বলেন তিনি।সব মিলিয়ে এভারেস্ট অভিযাত্রা বাবদ বাবর আলীর যে ঋণ রয়েছে তা পরিশোধে এগিয়ে আসতে ইতোমধ্যেই আবার ক্রাউডফান্ডিং শুরু করতে হয়েছে।বাংলাদেশের আরেক পর্বতারোহী অণু তারেক তার ফেসবুক পোস্টে একটি ব্যাংক হিসাব এবং একটি মোবাইল ওয়ালেট অ্যাকাউন্ট উল্লেখ করে সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন।তিনি লিখেছেন, “এই স্বপ্নপাগল তরুণের কাঁধে এখনো ঋণের বোঝা আছে, যা আপনি-আমি কিছুটা হলেও কমাতে পারি।তবে বাবর আলীর এভারেস্টের চূড়ায় ওঠার খবর প্রচার হতেই ইতিমধ্যে অনেকেই আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছেন বলে জানান মি. জামান।তিনি বলেন, “বাবর এখন বিজয়ী ঘোড়া। তার পেছনে এখন অনেকেই টাকা বিনিয়োগ করবে। ইতিমধ্যে কয়েকটি কোম্পানি যোগাযোগ করে বলেছে তারা বাবর আলীকে ব্র্যান্ডিং করতে চায়। যারা এতদিন সাড়া দেয়নি আমরা এখন তাদের সাথেও পুনরায় যোগাযোগ করব। যদি তারা কন্ট্রিবিউট করতে পারে।সোমবার বাবর আলী চেষ্টা করবেন এভারেস্টের সঙ্গে লাগোয়া পৃথিবীর চতুর্থ শীর্ষতম পর্বতশৃঙ্গ লোৎসে আরোহণের। এজন্য তিনি পাঁচ হাজার ডলার রয়্যালটি ফি ইতিমধ্যে পরিশোধ করেছেন।লোৎসেতে ইতিপূর্বে কোনও বাংলাদেশি আরোহণ করেননি বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন।এ নিয়ে মি. জামান জানান, রবিবার ক্যাম্প-৪ এ নেমে মাঝরাতে আবারও দ্বিতীয় লক্ষ্যের পথে যাত্রা শুরু করতে পারেন বাবর আলী।সব অনুকূলে থাকলে সোমবার ভোরে তিনি লোৎসের চূড়ায় পৌঁছে যাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।পৃথিবীর সর্বোচ্চ চূড়া মাউন্ট এভারেস্টে জয়ের জন্য বাবর আলী রওনা দিয়েছিলেন গত পহেলা এপ্রিল। ১০ই এপ্রিল এভারেস্টের বেস ক্যাম্পে পৌঁছান।এরপর চূড়ায় ওঠার মতো উপযুক্ত আবহাওয়ার জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়।অবশেষে ১৪ই মে তিনি এভারেস্ট বেস ক্যাম্প থেকে যাত্রা শুরু করেন। প্রথম দিনেই সরাসরি উঠে আসেন ২১ হাজার তিনশ ফুট উঁচুতে ক্যাম্প টু-তে।এর পরের কয়েকদিনে ক্যাম্প থ্রি ও ক্যাম্প ফোরে পৌঁছে যান। ২৬ হাজার ফুট উচ্চতায় ক্যাম্প-৪ এর উপরের অংশকে বলা হয় ডেথ জোন বা মৃত্যুপুরী।অবশেষে ১৮ই মে মাঝরাতে আবারও শুরু হয় বাবরের যাত্রা। অবশেষে ১৯শে মে সকালে তিনি এভারেস্টের চূড়ায় পা রাখেন।বাংলাদেশের প্রথম নারী হিসাবে নিশাত মজুমদার ২০১২ সালের এই ১৯শে মে তারিখেই এভারেস্টের চূড়ায় উঠেছিলেন।বাবর আলীর চূড়ায় আরোহণের ছবি বা ভিডিও এখন পর্যন্ত কারও হাতে আসেনি।মি জামান জানান, বাবর আলী এর আগে ২০২২ সালে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে নেপালেরই আমা দাবালাম পর্বতশিখরে আরোহণ করেন।মূলত সেই সময় থেকে এভারেস্টের চূড়ায় ওঠার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার প্রস্তুতিতে এগিয়ে যান তিনি।মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় ওঠার প্রথম সফল অভিযান ১৯৫৩ সালে হলেও বাংলাদেশ এক্ষেত্রে নিজস্ব ইতিহাস গড়েছে ২০১০ সালে।সে বছরের ২৩শে মে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে মুসা ইব্রাহীম এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন।এরপর ২০১১ সালের ২১শে মে দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয় করেন মোহাম্মদ আবদুল মুহিত।এর পরের বছর ২০১২ প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে এভারেস্ট শৃঙ্গ জয় করেন নিশাত মজুমদার।মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে ওয়াসফিয়া নাজরীন দ্বিতীয় বাংলাদেশি নারী হিসেবে এভারেস্ট জয় করেন। তার সাথে মোহাম্মদ আবদুল মুহিত দ্বিতীয়বারের মতো এভারেস্টে উঠেছিলেন।পরের বছর ২০১৩ সালে খালেদ হোসেন নামে আরেক বাংলাদেশি এভারেস্ট জয় করলেও ফেরার পথে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।