সরকারের একজন মন্ত্রীর বিদেশে ব্যবসার তথ্য প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। বিদেশে ওই মন্ত্রীর মোট সম্পদমূল্য ১৬ কোটি ৬৪ লাখ পাউন্ড (২ হাজার ৩১২ কোটি টাকা) বলে জানানো হয়েছে। তবে মন্ত্রীর নাম প্রকাশ করেনি সংস্থাটি।মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবির কার্যালয়ে ‘নির্বাচনী হলফনামার তথ্যচিত্র: জনগণকে কী বার্তা দিচ্ছে?’ শিরোনামে টিআইবির এই সংবাদ সম্মেলন হয়। সেখানে প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদন তুলে ধরেন এই গবেষণা দলের প্রধান মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।টিআইবি বলেছে, প্রার্থীদের হলফনামায় দেওয়া আয় ও সম্পদের অথবা ঋণ ও দায় বিবরণী কতোটা সঠিক, এবং আয় ও সম্পদ কতোটা বৈধ উপায়ে অর্জিত তা যাচাই করা হয় না। হলফনামায় প্রার্থীরা নিজেদের অর্জিত সম্পদ কতোটা দেখিয়েছেন? পুরোটা দেখিয়েছে কিনা? কিংবা দেশে বা বিদেশে সম্পদ ধরনের তথ্য গোপন করেছেন কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন করার সুযোগ তৈরি হয়েছে।টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, তাদের কাছে প্রাপ্ত নির্ভরযোগ্য তথ্য অনুযায়ী সরকারের মন্ত্রিসভার অন্তত একজন সদস্যের নিজ নামে বিদেশে একাধিক কোম্পানি থাকার প্রমাণ রয়েছে। হলফনামায় তা দেখা যাচ্ছে না। ওই মন্ত্রী ও তার স্ত্রীর মালিকানাধীন ছয়টি কোম্পানি এখনো বিদেশে সক্রিয়ভাবে আবাসন নির্মাণ (রিয়েল স্টেট) ব্যবসা পরিচালনা করছে। সেগুলোর মূল্য ১৬ দশমিক ৬৪ কোটি পাউন্ড বা ২ হাজার ৩১২ কোটি টাকা। ওই মন্ত্রী তার হলফনামায় বিদেশে থাকা সম্পদের ব্যাপারে তথ্য দেননি।সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ওই মন্ত্রী ২০১০ সালে প্রথমে একটি কোম্পানি খোলেন, যার বর্তমান সম্পদ মূল্য ১ দশমিক ৭৩ কোটি পাউন্ড। এরপর ২০১৬ সালে আরেকটি কোম্পানি খোলেন, যার বর্তমান সম্পদ মূল্য ৭ দশমিক ৩১ কোটি পাউন্ড। ২০১৯ সালে তৃতীয় কোম্পানি খোলেন, যার বর্তমান সম্পদ মূল্য ২ দশমিক ৭৯ কোটি পাউন্ড। তিনি ২০২০ সালে চতুর্থ কোম্পানি চালু করেন, যার সম্পদ মূল্য ২ দশমিক ১৫ কোটি পাউন্ড এবং ২০২১ সালে পঞ্চম ও ষষ্ঠ কোম্পানি খোলেন, যেগুলোর বর্তমান সম্পদ মূল্য ৩ দশমিক ২২ কোটি পাউন্ড।এ সময় নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ নির্বাচনের নির্বাচন কমিশনে দেয়া প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। তথ্যচিত্র তুলে ধরেন তিন সদস্যের গবেষণা দলের প্রধান তৌহিদুল ইসলাম। অন্য দুই সদস্য ছিলেন রিফাত রহমান ও রফিকুল ইসলাম। তৌহিদুল ইসলাম বলেন, দ্বাদশ নির্বাচনে এক হাজার ৮৯৬ জন অংশগ্রহণ করছেন। এরমধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী ১৮ শতাংশ। আর দলীয় প্রার্থী ৮২ শতাংশ।আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোটিপতি প্রার্থীর সংখ্যা ৫৭১। এর মধ্যে আওয়ামী লীগে ২৩৫ জন কোটিপতি প্রার্থী, জাতীয় পার্টির ৪৭ জন, স্বতন্ত্র ১৬৩ জন, জাসদের ৭ জন কোটিপতি, তৃণমূল বিএনপির ৬ জন কোটিপতি প্রার্থী।এক হাজার ৮৯৬ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করছেন। তাদের মধ্যে ১৬৪ প্রার্থীর বছরে এক কোটি টাকার বেশি আয়। ১০০ কোটির বেশি সম্পদ রয়েছে ১৮ জনের বেশি প্রার্থীর।