সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে এন্ডোস্কপির মাধ্যমে মোতালেব হোসেন (৪০) নামের এক যুবকের পেট থেকে ১৫টি কলম বের করেছেন চিকিৎসক। তাঁর পেটে আরও চার–পাঁচটি কলম রয়েছে।মোতালেব হোসেন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার খুকনী ইউনিয়নের আটারদাগ গ্রামের মৃত আবদুর রহমানের ছেলে। ব্যথা ও অসুস্থতা নিয়ে একের পর এক চিকিত্সকের কাছে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু কোনো সমাধান মিলছিল না। শেষে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসে বিষয়টি ধরা পড়ে এবং ওই যুবকের পেট থেকে ১৫টি কলম বের করা হয়।পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, এর আগে ২০০৬ সালেও মোতালেব হোসেনের পেটব্যথা হয়েছিল। সে সময় অস্ত্রোপচার করে তাঁর পেট থেকে দুটি লোহার টুকরা বের করা হয়।হাসপাতালের সার্জারি বিভাগ সূত্র জানায়, মেডিসিন বিভাগের চিকিত্সকেরা দুই সপ্তাহ ধরে মোতালেব হোসেনের পেটব্যথার চিকিত্সা দিয়েছেন। কোনো ফল না পেয়ে পেটে এক্স-রে ও আলট্রাসনোগ্রাম করে বুঝতে পারেন, তাঁর পাকস্থলিতে কলমজাতীয় বস্তু রয়েছে। এরপর গত বৃহস্পতিবার তিন ঘণ্টায় (বেলা ১১টা থেকে পৌনে ২টা পর্যন্ত) তাঁর গলা দিয়ে টিউব ঢুকিয়ে (এন্ডোসকপি করে) ১৫টি কলম বের করা হয়। তাঁর পেটে এখনও চার-পাঁচটি কলম রয়েছে।মোতালেব হোসেনের মা লাইলী বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে ভালো ছাত্র ছিল। এসএসসি পাসের পর সে গাঁজায় আসক্ত হয়ে পড়ে। এরপর কখন কলমগুলো গিলেছে আমরা বলতে পারব না। দীর্ঘদিন সুস্থ স্বভাবিকভাবেই কাজ করেছে সে। এক বছর হলো পেটব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়ে।শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের জুনিয়র কনসালট্যান্ট আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘১৫টি কলম বের করা হয়েছে। আগামী সোমবার আবার এন্ডোস্কপির মাধ্যমে বাকি কলমগুলো বের করা হবে। স্বাভাবিক অবস্থায় তিনি কীভাবে কলমগুলো গিললেন, বুঝতে পারছি না। এটি আসলেই চিন্তার বিষয়। আমাদের মনে হচ্ছে, তাঁর স্নায়ুতন্ত্রের কোনো সমস্যা থাকতে পারে।জানতে চাইলে মোতালেব হোসেন বলেন, ‘আগে একদম সুস্থ–স্বাভাবিক ছিলাম। এক বছর ধরে পেটব্যথায় কোনো কাজ করতে পারছিলাম না। তবে কখন, কীভাবে কলমগুলো গিলে ফেলেছি, কিছুই বলতে পারছি না।পরিবার সূত্রে জানা যায়, তাঁতের শাড়িতে ব্যবহার করা নকশা এঁকে সেটি তাঁতযন্ত্রে বসানোর কাজ করতেন মোতালেব হোসেন। তিনি ১৯৯৯ সালে প্রথম বিভাগে এসএসসি পাশ করেন। এরপর ২০২১ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও পরীক্ষা দেননি তিনি।হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান জাহিদুল ইসলাম বলেন, মোতালেব হোসেন এখন অনেকটাই সুস্থ। সবগুলো কলম অপসারণের পর তাঁকে স্নায়ুতন্ত্র বিভাগে চিকিত্সা দেওয়া হবে।