বঙ্গোপসাগরের কোলঘেঁষে লবণ চাষের জন্য খ্যাত দেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ উপজেলা কক্সবাজারের মহেশখালী মাতারবাড়িতে চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। এ ইউনিয়নে বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশাপাশি এগিয়ে চলেছে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের কাজ। এরই মধ্যে দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে বন্দরটির কর্মকাণ্ড। এই বন্দর চালু করা গেলে এই সমুদ্রবন্দর হয়ে উঠবে দক্ষিণ এশিয়ার একটি আঞ্চলিক হাব। ভিড়বে মাদার ভেসেল। বছরে পাঁচ বিলিয়ন ডলার সাশ্রয়ের হাতছানি নিয়ে বদলে দেবে গোটা দেশের অর্থনীতি। তবে মাতারবাড়ী বন্দরকে ঘিরে অন্তত ২০ কোটি টাকা রাজস্ব পেয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর। জানাগেছে, মহেশখালীর মাতারবাড়ি বন্দরে মাত্র ২৪ দিনের ব্যবধানে ভিড়ল কয়লাবাহী বিশাল আকৃতির দ্বিতীয় মাদারভ্যাসেল। সকালে চট্টগ্রাম বন্দরের পাইলটরা দক্ষতার সঙ্গে গভীর সাগর থেকে জাহাজটিকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে এনে ভিড়িয়েছেন। এ নিয়ে এক মাসে দেশে এলো বিদ্যুৎকেন্দ্রের দেড় লাখ মেট্রিক টন কয়লা।শুক্রবার (১৯ মে) মাতারবাড়ি বন্দরের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটিতে এসে পৌঁছায় হংকংয়ের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি ওয়াই এম ইন্ডেভোয়ার। এক মাসের মধ্যে মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য দুইটি মাদারভ্যাসেলে করে দেশে এসেছে অন্তত দেড় লাখ মেট্রিক টন কয়লা। শুক্রবার সকালে বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা নিয়ে বন্দরে এসে ভিড়েছে এমভি ওয়াই এম ইন্ডেভোয়ার নামে জাহাজটি। আধ ঘণ্টার কম সময়ে সতর্কতার সঙ্গে জেটিতে ভেড়ানো হয় ২২৯ মিটার দীর্ঘ ও সাড়ে ১২ মিটার গভীরতার এ জাহাজকে।বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, ইন্দোনেশিয়ার তারাহান বন্দর থেকে প্রায় ৬৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে মাতারবাড়ি বন্দরে এসেছে জাহাজটি। জাপানের সহযোগিতায় মাতারবাড়িতে গড়ে ওঠা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য এক মাসেই আনা হয়েছে প্রায় দেড় লাখ মেট্রিক টন কয়লা। শনিবার (২০ মে) থেকেই শুরু হবে জাহাজের কয়লা খালাসের কার্যক্রম। এর আগে গত ২৫ এপ্রিল এই বন্দরে ভিড়েছিল সবচেয়ে বড় জাহাজ এমভি অওয়াসু মারু। এ জাহাজ ভিড়িয়ে গভীর সমুদ্র বন্দরের অনুমোদনও পেয়ে গেছে মাতারবাড়ি বন্দর। জাহাজটি ভেড়ানোর সময় মাতারবাড়ি বন্দরের পাশাপাশি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জেটিতে উপস্থিত ছিলেন। তবে এখনও বন্দর হিসাবে গড়ে না উঠলেও গত দেড় বছরে ১১৪টি জাহাজ ভিড়িয়ে নতুন রেকর্ড স্থাপন করেছে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর। এর আগে ১১২টি জাহাজ বিদ্যুৎকেন্দ্রের যন্ত্রপাতি আনলেও বাকি দুইটি বিশাল আকৃতির জাহাজ এনেছে বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা। আশেক উল্লাহ রফিক এমপি বলেন, দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণামতে নির্দিষ্ট সময়ে কয়লা নিয়ে জাহাজ এসেছে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও গভীর সমুদ্রবন্দর পুরোদমে চালু হলে দেশের অর্থনীতিসহ পাশাপাশি বেশ কয়েকটি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।