দুপুরে হঠাৎ প্রসববেদনা উঠে গৃহবধূ রাশেদা বেগমের (৩৫)। অবস্থা বেগতিক দেখে কারে করে দ্রুত সীতাকুণ্ডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান স্বজনরা। সেখানে পরীক্ষায় তার জমজ বাচ্চা দেখেন চিকিৎসক। কিন্তু ঐ গৃহবধুর আগের সন্তানটি সিজারে হওয়ায় ডাক্তাররা জমজ সন্তান প্রসবকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করেন। এতে তারা তাকে দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন।কিন্তু সামান্য কিছুদূর যেতেই তার আবারও প্রসববেদনা শুরু হয়। বাধ্য হয়ে কাছাকাছি থাকা সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয় তাকে। এখানে এমন রোগী দেখে ছুটে আসেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. বিবি কুলসুম সুমি। এ অবস্থায় রোগীকে কার থেকে নামানোও ঝুঁকিপূর্ণ মনে করেন তিনি। ফলে কারের মধ্যেই ডেলিভারি করানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। সাথে যোগ দেন সিনিয়র স্টাফ নার্স সুমিত্রা চক্রবর্তী, মায়া রানী দে, সুমনা আক্তার, ইনচার্জ ইন্দিরা ও আয়া নুরজাহান।এ সময় তাদেরকে দিকনির্দেশনা দেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নুর উদ্দিন রাশেদ। পরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. বিবি কুলসুম সুমি পুরো টিমকে কাজে লাগিয়ে নরমাল ডেলিভারি করিয়ে একে একে দুটি কন্যা সন্তান প্রসব করান। মা ও সন্তান তিনজনই সুস্থ আছেন। রাশেদা বেগম উপজেলার বারৈয়াঢালা ইউনিয়নের লালানগর গ্রামের বাসিন্দা কৃষক আবুল বাশারের স্ত্রী।এদিকে সীতাকুণ্ড হাসপাতালে এসে এভাবে দ্রুত সেবা পেয়ে আবেগাপ্লুত প্রসূতি মা রাশেদা ও তার স্বামী-স্বজনরা। তারা চিকিৎসকদের কাছে কৃতজ্ঞতা জানান।জমজ সন্তানের পিতা কৃষক আবুল বাশার পূর্বকোণকে বলেন, স্ত্রীকে চমেকে নিয়ে যাচ্ছিলাম। সীতাকুণ্ড হাসপাতালের সামনে বেশি ব্যাথা উঠায় দ্রুত সেখানে নিয়ে যাই। আমাদের অবস্থা শুনে চিকিৎসকরা দ্রুত ছুটে আসেন এবং দারুণ সেবা দেন। এ রকম সহযোগিতা পাব ভাবতে পারিনি। আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুর উদ্দিন রাশেদ বলেন, আমরা সবসময় এভাবে সেবা দিতে প্রস্তুত থাকি। সেবাগ্রহীতারা খুশি হলেই আমরা খুশি। আজ প্রসূতি মা রাশেদা বেগমের অবস্থা দেখে আমাদের চিকিৎসক বিবি কুলসুম সুমি ও তার টিম দারুণ সার্ভিস দিয়েছেন। তাদের দুটি ফুটফুটে কন্যা শিশু হয়েছে। সবাই সুস্থ আছে। তাদের খুশি দেখে আমাদেরও ভালো লাগছে।