পেকুয়ার রাজাখালীর গৃহবধূ হামিদা বেগম (৪৫)। অজপাড়াগাঁয়ের হামিদার পারিবারিক অবস্থা অসচ্ছল। বড় হাসপাতাল বা নাম করা ডাক্তারের স্মরণাপণ্ণ হতে পারেন না টাকা অভাবে। সরকারি হাসপাতালে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে প্রায়শই গাইনি বিষয়ে চিকিৎসা নেন। এতে তাঁর রোগ সারে না, চিকিৎসা নিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারছিলেন না।সেই টানাপোড়েন পরিবারের গৃহবধূ হামিদা বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) সকালে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে এসে জানতে পারেন বিকেলে খুবই কম খরচে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখানো যাবে। সেই ব্যবস্থা করেছেন সরকার। এ তথ্য জেনেই তিনি আর বহিঃবিভাগে চিকিৎসা নেননি। বিকেলে ছুটে আসেন সরকার ঘোষিত বৈকালিক চেম্বারে। তিনি তিনশ টাকা ভিজিটে গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা সেবা নেন।হামিদা বলেন, ‘আল্লাহর রহমত ছিলো বলেই হাসিনার সরকার আমাদের মতো গরীবের জন্য চিকিৎসা সহজলভ্য করেছেন। তাই, আজ দীর্ঘদিন পর নিজের মনমতো চিকিৎসা পেলাম।’নিম্ন আয়ের মানুষের দোরগোড়ায় চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দিতে সরকার পাইলট প্রকল্পের আওতায় সরকারি হাসপাতালে স্বল্প ভিজিটে বৈকালিক চেম্বারে চিকিৎসার উদ্যোগ নেয়। এই প্রকল্পের আওতায় কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সও একটি।বৈকালিক চেম্বার উদ্বোধনের প্রথমদিন বৃহস্পতিবার স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ ৭ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। তন্মধ্যে তিনশ টাকা ভিজিটে ২ জন ও ৪ জন দেড়শ টাকা ভিজিটে চিকিৎসা নেন। চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব জাফর আলম রোগীদের অনুপ্রানিত করতে প্রথম রোগী হিসেবে নিজের শারীরিক চেক আপের মাধ্যমে প্রথম চিকিৎসা নিয়ে বৈকালিক চেম্বারের উদ্বোধন করেন।এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মহিউদ্দিন মাজেদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘প্রথম দিন চারজন নারী, একজন শিশু ও একজন পুরুষ বৈকালিক চেম্বারে চিকিৎসা নিয়েছেন। বৈকালিক চেম্বারে চিকিৎসা সেবার সময় হাসাপাতালে সকল পরীক্ষা ও ইমেজিং সেবাও চলমান থাকবে।এতো কম রোগী কেন জানতে চাইলে তিনি পূর্বকোণকে বলেন, ‘বৈকালিক চেম্বারে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পাইলট প্রকল্পের আওতায় নেয়া হয়েছে জানতে পেরেছি মঙ্গলবার(২৮ মার্চ)। বুধবার(২৯ মার্চ) জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন মাধ্যমে সরকারের পাইলট প্রকল্পের আওতায় বৈকালিক চেম্বারে চিকিৎসার বিষয়টি প্রচার করা হলেও তা যথেষ্ট ছিল না। তাই প্রথমদিন রোগী কম এসেছে। তবে যারা এসেছে তাঁরা খুবই সন্তুষ্ট। আমাদের পক্ষ থেকে এই চিকিৎসা সেবা নিয়ে আরো প্রচারণা চালানো হবে।’পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মহিউদ্দিন মাজেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য আলহাজ জাফর আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূর্বিতা চাকমা।