চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের আওতাধীন বরইতলী বনবিট কর্মকর্তা-কর্মচারী ও হেডম্যানদের যোগসাজশে শতবর্ষী মাদারট্রি গর্জনসহ বিভিন্ন বনজ ও ফলজ গাছ কর্তন করে উজাড় করা হচ্ছে বন। এমনকি, বনবিট কর্মকর্তাকে মোটা অংকের উৎকোচ দিয়ে প্রতিনিয়ত পাহাড় কেটে তৈরি করা হচ্ছে পাকা ও আধা পাকা ঘর। যার কারণে ধ্বংস হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য ও হুমকির মুখে পড়েছে জীববৈচিত্র্য। গতকাল ১৮ই মার্চ ( শনিবার) সাংবাদিকরা বরইতলী বনবিটের অধীনে বনভূমি সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে বনবিট কার্যালয় লাগোয়া বরইতলী ইউনিয়নের বানিয়ারছড়া পূর্বকোল ভিলিজারপাড়া এলাকায় সদ্য কর্তনকৃত একাধিক মাদাট্রি গর্জন গাছের নিচের অংশ অর্থাৎ মুতা (শেখড়) দেখতে পাওয়া যায়। এসময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা যায়, রাতের অন্ধকারে বনবিট কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাবেক হেডম্যান মোঃ নেচার ও বর্তমান হেডম্যান মোহাম্মদ হোসেনের নেতৃত্বে এ গাছগুলো কাটা হচ্ছে বলে জানান। পরে গাছ কর্তনের ব্যাপারে জানতে বরইতলী বনবিট কর্মকর্তা হাসানুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ থাকার কারণে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি এবং পরবর্তীতে বানিয়ারছড়া স্টেশনে বরইতলী বিটের পিএম আবদুল্লাহ মামুনের সাথে সাক্ষাৎ হলে তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি একাধিক গাছ কর্তনের বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং তিনি বলেন, একটি গর্জন গাছ ভেঙে যাওয়ার কারণে গাছটি তারা কেটে বিট কার্যালয়ে নিয়ে আসেন বলে জানান। এদিকে, এ ব্যাপারে সাবেক হেডম্যান মোঃ নেচার ও বর্তমান হেডম্যান মোহাম্মদ হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তারা গাছ কর্তনের বিষয়টি অস্বীকার করেন। অপরদিকে চুনতি রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দু রাজ্জাকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি জানেন না বলে জানান এবং খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছেন।উল্লেখ্য: বরইতলী বনবিটের পিএম আব্দুল্লাহ মামুনের ভাষ্যমতে, বরইতলী বনবিটের আওতাভুক্ত ১ হাজার একর বনভূমির মধ্যে মাত্র ২ একর জায়গা তাদের দখলে রয়েছে। বাকী বনভূমির জায়গাগুলো বনভূমির সামাজিক বনায়নের সুবিধাভোগীরা স্থায়ীভাবে দখলে নিয়ে নিয়েছে। লোকবল সংকটের কারণে তাদেরকে উচ্ছেদ ও করা যাচ্ছে না। তবে, সামাজিক বনায়নের সুবিধাভোগীদের দাবী বনবিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মোটা অংকের উৎকোচ দিয়ে ম্যানেজ করেই তারা বনভূমি দখলে রেখেছেন। এছাড়াও বনবিট কর্মকর্তাকে মোটা অংকের উৎকোচ দিয়ে বনভূমিতে পাকা ও আধা পাকা বাড়ি-ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।