রাঙামাটির রাজস্থলীতে শুরু হয়েছে আগাম জাতের রোপা আমন ধান কাটার উৎসব। আমন ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। সোনালি ধান হাসি ফুটিয়েছে তাদের মুখে। বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে এখন কেবল ধান আর ধান।হেমন্তের সকালে সে ধানের ডগায় শোভা পাচ্ছে মুক্তার মতো ঝলমলে শিশির বিন্দু। কোথাও কোথাও এরই মধ্যে সবুজ ধান পেকে সোনালি বর্ণ ধারণ করেছে। সেই ধান কাটার চলছে উৎসব। ক’দিনের মধ্যে পুরো ক্ষেতের পাকা ধান ঘরে উঠবে। আবার পাহাড়ের চূড়ায় জুম চাষের ধান পাকায় কৃষক-কৃষাণীরা মেতে উঠেছেন ধান কাটার উৎসবে। অথচ নানান প্রতিকূল আবহাওয়ায় এবার শঙ্কা ছিল কাঙ্ক্ষিত ফলন না পাওয়ার। তবে কৃষক ও কৃষি অফিস বলছে, বরাবরের মতো এবারও ভালো ফলনই হয়েছে রাজস্থলী উপজেলার তিন ইউনিয়নে।উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে ৯৪৮ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯৪৮ হেক্টরই। গত বছর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯১৩ হেক্টর। এ বছর ব্রি ধান-৪৯, পাইজাম, দিনাজপুরী পাইজাম, ব্রি ধান-৫১, ব্রি ধান-৮৭ সহ অন্যান্য আগাম জাতের ধান আবাদ হয়েছে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে। কম সময়ে ফলন এবং কম খরচে এই জাতের ধান চাষ করে সফলতা পেয়েছেন অনেক কৃষক।তবে মৌসুমের শুরুতে অনাবৃষ্টিসহ প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার মধ্যেও গত বছরের তুলনায় এবার ৩৫ হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে আবার সিত্রাংয়ের আঘাতে ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে কিছুটা। সব কাটিয়ে তবু প্রত্যাশার চেয়ে ভাল ফলনের আশাই করছে কৃষক ও কৃষি অফিস।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুব আলম রনি বলেন, আমন মৌসুমে কম সময়ে অধিক ফলন হয়, এমন জাতের ধানের আবাদ বৃদ্ধির জন্য কাজ করছি। চলতি আমন মৌসুমে ১৮০ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। সিত্রাংয়ের তা-বে ঝড়ে কিছু ধানের গাছ নুইয়ে পড়েছিল। তবে এবারও আমরা গতবারের চেয়ে বেশি ফলন পাবো।এবার চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২৬৩১ মেট্রিক টন এবং ধানের লক্ষ্যমাত্রা ৩৯৪৬ মেট্রিক টন। মাহবুব আলম রনি আরো বলেন, কৃষক ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ধান কাটা শেষে সবজি তেল ও ডাল জাতীয় ফসল আবাদ করবে। জমিতে ধান চাষের পর আলু, সরিষাসহ রবিশস্য উৎপাদন কৃষকদের জন্য বোনাস ফসল। কৃষকের উৎপাদন ও আয় দুটোই বাড়বে এতে।