চকরিয়াTuesday , 28 June 2022
  1. Lead Post
  2. অর্থনীতি
  3. আইন আদালত
  4. আজব খবর
  5. আন্তর্জাতিক
  6. আলোকিত চকোরিয়া
  7. আলোকিত বন্ধু সমাবেশ
  8. আলোকিত বাংলাদেশ
  9. আলোকিত বিজ্ঞাপন
  10. আলোকিত মানুষ
  11. আলোকিত শিশু
  12. আলোকিত সংবাদ
  13. আলোকিত সাময়িকী
  14. ইসলাম ও ধর্ম
  15. কক্সবাজার
আজকের সর্বশেষ সবখবর

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাঁচ বছরে দেড় লাখ শিশুর জন্ম

admin2
June 28, 2022 8:37 pm
Link Copied!

উখিয়ার মধুরছড়া আশ্রয়শিবিরের পাহাড়ি ঢালে ছোট্ট একটি শেড ঘরে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বাস করছেন রোহিঙ্গা ছৈয়দ কাছিম (৫২)। পাঁচ বছর আগে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে আসার সময় সঙ্গে ছিল স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে। আশ্রয়শিবিরে গত পাঁচ বছরে ছৈয়দ কাছিমের সংসারে জন্ম নিয়েছে আরও দুই ছেলে ও দুই মেয়ে।মধুরছড়া, বালুখালী, লাম্বাশিয়া, জামছড়ি, কুতুপালং আশ্রয়শিবিরগুলো ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় প্রতিটা রোহিঙ্গা পরিবারে তিন থেকে নয়জন করে শিশুসন্তান রয়েছে। এ ছাড়া অনেক রোহিঙ্গা পুরুষেরই রয়েছে একাধিক স্ত্রী। বাল্যবিবাহের সংখ্যাও প্রচুর। এভাবে পাঁচ বছরে প্রায় দেড় লাখ শিশুর জন্ম হয়েছে আশ্রয়শিবিরগুলোতে। আর দৈনিক গড়ে জন্ম নিচ্ছে ৯০ শিশু।এ অবস্থায় বর্তমানে আশ্রয়শিবিরগুলোতে বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ রোধসহ বিভিন্ন সচেতনমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নে কাজ করছে ৩৪টির বেশি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও)। রয়েছে ২০০ স্বাস্থ্যকেন্দ্র। এভাবে রোহিঙ্গাদের পরিবার পরিকল্পনায় আগ্রহী করে তোলা হচ্ছে।ছৈয়দ কাছিম বলেন, মিয়ানমারে থাকতে পরিবার পরিকল্পনা কী জিনিস, জানতেন না তিনি। বাংলাদেশে আসার পর জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা পাচ্ছেন। প্রথম দিকে পরিবার পরিকল্পনায় অনীহা থাকলেও, এখন কমবেশি সবাই সচেতন।শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয় ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১২ লাখ। এর মধ্যে এক মাস থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুর সংখ্যা প্রায় ৭ লাখ। ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশু প্রায় ৪ লাখ। বাকি এক মাস থেকে চার বছর ১০ মাস বয়সী দেড় লাখ শিশুর জন্ম বাংলাদেশে।বেসরকারি সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেনের পরিসংখ্যান ও সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, ৩৪টি আশ্রয়শিবিরে দৈনিক গড়ে জন্ম নিচ্ছে ৯০ শিশু। সে হিসাবে মাসে জন্ম নিচ্ছে ২ হাজার ৭০০ শিশু। বছরে ৩২ হাজার ৪০০ শিশু।জেলা সিভিল সার্জন মাহবুবুর রহমান বলেন, আশ্রয়শিবিরে ২০-২৫ বছর বয়সী বহু নারী রয়েছেন, যাঁরা পাঁচ থেকে ছয় সন্তানের জননী। এখন শিবিরগুলোতে গর্ভবতী নারী আছেন ৪০ হাজারের বেশি।আশ্রয়শিবিরগুলো নিয়ন্ত্রণ করে আরআরআরসি কার্যালয়। এর স্বাস্থ্য সমন্বয়কারী চিকিৎসক আবু তোহা এম আর ভূঁইয়া বলেন, আশ্রয়শিবিরে পাঁচ বছরে জন্ম নিয়েছে প্রায় দেড় লাখ শিশু। করোনা মহামারির সময় শিশুজন্মের হার ৩ শতাংশ বেড়ে ৩৩ হাজারে দাঁড়িয়েছিল। এখন কমে আসছে।ইসলামের দৃষ্টিতে পরিবার ছোট রাখা এবং সামাজিক মর্যাদার বিষয় বোঝানোর পর রোহিঙ্গারা পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণে আগ্রহী হচ্ছে জানিয়ে আবু তোহা বলেন, আগে ঘরে অদক্ষ ধাত্রীর হাতে শতভাগ শিশুর জন্ম হতো। এখন ৭০-৮০ শতাংশ শিশুর জন্ম হচ্ছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।বালুখালী শিবিরের রোহিঙ্গা নেতা বদিউল আলম (৫৫) বলেন, রাখাইন রাজ্যে কন্যাসন্তানকে ১৪-১৫ বছরে বিয়ে দেওয়া হতো। অনেক পুরুষের একসঙ্গে চারজন স্ত্রীও রয়েছে। ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি বিবেচনা করে পরিবার পরিকল্পনাকে ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখত রোহিঙ্গারা।আরও কয়েকজন রোহিঙ্গা নেতা বলেন, রাখাইনে (মিয়ানমারে) রোহিঙ্গারা ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী। ভবিষ্যৎ চিন্তা ও জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বাড়াতে রোহিঙ্গারা পরিবার বড় করতে চাইত। তা ছাড়া রাখাইনে সে দেশের সেনাবাহিনী ও মগ সম্প্রদায়ের লোকজনের ভয়ে অল্প বয়সে রোহিঙ্গা কিশোরীদের বিয়ে দেওয়া হতো। বাংলাদেশে আসার পরও সেই প্রবণতা অব্যাহত ছিল। তবে এখন কমে আসছে।আশ্রয়শিবিরগুলোতে রোহিঙ্গা শিশুদের পাঠদানের পাশাপাশি সচেতনতামূলক বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে সমাজকল্যাণ উন্নয়ন সংস্থা (স্কাস)।এর চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমা বলেন, ইউনিসেফের সহযোগিতায় তাঁরা রোহিঙ্গা শিশুদের ইংরেজি, বার্মিজ, গণিত ও লাইফ স্কিল শেখানোর পাশাপাশি নারী-পুরুষদের লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা, বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, নারী-শিশু পাচার, শিশুশ্রমসহ সামাজিক সুরক্ষা বিষয়ে সচেতন করে আসছেন শুরু থেকে। এ জন্য রোহিঙ্গাদের নিয়ে শতাধিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। সুফলও মিলছে। বাল্য ও বহুবিবাহ কমে আসার পাশাপাশি পরিবার ছোট রাখার বিষয়ে আগ্রহী হচ্ছে রোহিঙ্গারা।পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চার বছর আগেও রোহিঙ্গা পুরুষেরা কনডম ব্যবহারে আগ্রহী ছিলেন না। বোঝানোর পর এখন ৬০ শতাংশ পুরুষ কনডম ব্যবহার করছেন। গত মে মাসে কনডম ব্যবহারে অগ্রগতি ছিল ৬৪ দশমিক ৩২ শতাংশ, যা এপ্রিলে ছিল ৬২ দশমিক ৮২ শতাংশ। অথচ পাঁচ বছর আগে এ হার ছিল মাত্র ৭ শতাংশ।অধিদপ্তরের কক্সবাজারের উপপরিচালক চিকিৎসক পিন্টু কুমার ভট্টাচার্য বলেন, আশ্রয়শিবিরে ৩৪টির বেশি এনজিও পরিবার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। ২০০ স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে সেবা নিচ্ছে রোহিঙ্গারা। এর বাইরে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আওতাধীন ছয়টি কেন্দ্রে (টেকনাফে দুটি ও উখিয়ায় চারটি) গর্ভবতী নারীদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে।রোহিঙ্গা নারীদের খাওয়ার বড়ি গ্রহণের হার বেড়ে বর্তমানে ৪৮ শতাংশ হয়েছে জানিয়ে পিন্টু কুমার বলেন, এখন তিন মাস মেয়াদি ইনজেকশন এবং দীর্ঘমেয়াদি (১০ বছর ও ৩ বছর) পৃথক দুটি পদ্ধতি (কপারটি ও ইনপ্লেট) গ্রহণেও আগ্রহী হচ্ছেন আশ্রয়শিবিরগুলোর নারীরা।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।