তাজবীদ এবং তারতীলের পাশাপাশি কোরআন শরীফ কত প্রকার কেরাতে অবতীর্ণ হয়েছে এবং বর্তমানে কত প্রকার কেরাত নামাযে ও নামাযের বাইরে পড়া যাবে? কেরাতে হাফ্স, কেরাতে সাব’আর উৎপত্তি কিভাবে হলো? কোরআন শরীফ যদি সাত কেরাতে অবতীর্ণ হয়ে থাকে তাহলে কেরাতে আশারা কোত্থেকে এল? বিস্তারিত: কোরআন শরীফ সাত হরফে অবতীর্ণ হয়, তবে সাত হরফ দ্বারা প্রচলিত সাত কেরাত উদ্দেশ্য নয়, বরং কেরাতের ভিন্নতার সাত প্রকার উদ্দেশ্য, যার মধ্যে অনেক কেরাত বিদ্যমান। প্রাথমিকভাবে সাত প্রকারের ইখতিলাফ পরিচিত হয়ে উঠলে তখন সেই ইখতিলাফের পরিধি কিছুটা কমিয়ে দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত যখন রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ওফাতের পূর্বের রমাজানে শেষবারের মতো জিবরাঈল (আ.)-এর সাথে কোরআন শরীফের দাওর করেন, তখন এই ইখতিলাফের পরিধি অনেকাংশে কমিয়ে দেওয়া হয়। আর শেষ দাওরে যেসব ইখতিলাফ বিদ্যমান ছিল এর সব কয়টিকে হযরত উসমান (রা.) স্বীয় মাসহাফে জমা করেন এবং সাতটি মাসহাফ ক্বারীসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রেরণ করেন। ক্বারীগণ লোকদেরকে কেরাতগুলো শিক্ষা দেন এবং মানুষের মধ্যে তা ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করে। পরবর্তীতে উলামায়ে কেরাম এসব কেরাতকে জমা করে কিতাব লেখেন। সর্বপ্রথম ইমাম কাসেম বিন সাল্লাম, আবু হাতেম, কাজী ইসমাঈল এবং আবু জাফর (রহ.) এ বিষয়ে কিতাব লেখেন। এর মধ্যে বিশের ঊর্ধ্বে কেরাত বিদ্যমান ছিল। অতঃপর আল্লামা ইবনে মুজাহিদ (রহ.)-এর মধ্য হতে সাতটি কেরাত জমা করে কিতাব লেখেন। তাঁর লেখার দ্বারা সাতটি কেরাত অন্যান্য কেরাতের তুলনায় অনেক বেশি প্রসিদ্ধ হয়, যা বর্তমানে কেরাতে সাবআ নামে পরিচিত। এই কেরাতগুলো বেশি প্রসিদ্ধ হওয়ার কারণে অনেকের এই ধারণা হয় যে সহীহ কেরাত এই সাতটিই। এই ভুল ধারণার অবসান ঘটানোর জন্য উলামায়ে কেরাম এর সাথে আরো তিনটি কেরাত সংযুক্ত করে মোট দশ কেরাতের কিতাবও লেখেন, যা পরবর্তীতে কেরাতে আশারা নামে পরিচিতি লাভ করে। উল্লেখ্য, দশ কেরাতের যেকোনটির দ্বারা নামায পড়া বৈধ। (১২/৮৪৯/৫০০৯)
ফাতহুল বারি : ৮/৬৪৩, আল ইতকান : ১৩৩, রদ্দুল মুহতার : ১/486, ১/৫৪১, উলুমুল কুরআন : ১৫৫। সুত্র-ফকিহুল মিল্লাত