কক্সবাজারের ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক খুরশিদুল জান্নাত কতৃক মিথ্যা, মানহানিকর অপপ্রচারের বিরুদ্ধে মিয়াজি পরিবারের এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ঈদগাঁও বাজারস্থ একটি অফিসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্য শহিদ উল্লাহ মিয়াজি ও সংক্ষুব্ধ পরিবারের সদস্যরা।
এসময় কমিটির সদস্য এস.এস. সরওয়ার কামাল
রমজান আলী ও মরহুম আলহাজ্ব জসিম উল্লাহ মিয়াজির সন্তান আসির আওসাফ তকি উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে শহিদ উল্লাহ মিয়াজি বলেন, ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খুরশীদুল জন্নাতের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের প্রায় পৌনে ২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ বিষয়ে সম্প্রতি বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। দুর্নীতিতে আকন্ঠ নিমজ্জিত খুরশীদুল জন্নাতের অনিয়ম, অপকর্ম ও দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে প্রকাশিত সংবাদে দিশেহারা হয়ে তিনি স্থানীয় কটি সংবাদ মাধ্যমে সর্বৈব অসত্য, মানহানিকর এবং ভিত্তিহীন তথ্য প্রচার করেছেন। তারই প্রতিবাদে মরহুম মৌলানা জসিম উল্লাহ মিয়াজীর পরিবার ও সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিবর্গের এ সংবাদ সম্মেলন।
তিনি বলেন, ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীনতম ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে উড়েছে কক্সবাজার জেলায় স্বাধীনতার প্রথম পতাকা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ শত শত নেতার পদধুলিতে ধন্য বিদ্যালয়টির প্রাক্তন অনেক শিক্ষার্থী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থেকে দেশমাতৃকার সেবায় এখনো নিয়োজিত।কিন্তু বর্তমান প্রধান শিক্ষক খুরশীদুল জন্নাতের অপকর্ম ও অনিয়মের কারণে ক্রমশ ক্ষুন্ন হচ্ছে বিদ্যালয়টির সুনাম, ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন অভিভাবক, নষ্ট হচ্ছে এলাকায় শিক্ষার পরিবেশ। বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাতে তার দুর্নীতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স’ নীতির সাথে সাংঘর্ষিক। এমতাবস্থায়, বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম সুসংহত রাখার স্বার্থে আমরা ম্যানেজিং কমিটির ৪ জন নির্বাচিত সদস্য প্রধান শিক্ষক খুরশীদুলের জান্নাতে বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী সরকারী বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করেছি।আমাদের অভিযোগের স্বপক্ষে যাবতীয় তথ্য-প্রমাণ আমরা আবেদনের সাথে সংযুক্ত করেছি। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসন থেকে চলমান তদন্ত কমিটির নিকট আমরা তা জমা দিয়েছি। বস্তুনিষ্ঠ ও সঠিক তথ্য-প্রমাণের সূত্র ধরে দেশের বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় ইতোমধ্যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। প্রচারিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়ে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে তিনি যে ‘প্রতিবাদ ও ব্যাখ্যা’ দিয়েছেন তা সম্পূর্ণই অসত্য, মানহানিকর ও ভিত্তিহীন। আমরা খুরশীদুল জন্নাতের প্রচারিত উক্ত প্রতিবাদ ও ব্যাখ্যার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাই।তিনি লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন, প্রধান শিক্ষক খুরশীদুল জন্নাত তার প্রতিবাদ ও ব্যাখ্যায় আমাদেরকে স্বাধীনতা বিরোধী একটি পক্ষ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অথচ এই খুরশীদুলই শহীদ মিনারে গোবর্জ্য রেখে ভাষা শহীদদের অবমাননা করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা ভাইরাল হলে স্থানীয় ছাত্রলীগ কর্মীরা তা পরিস্কার করে। শহীদ মিনারে গোবর্জ্য রাখার খবরটি ২০ ডিসেম্বর ২০২২খ্রি. জনকন্ঠ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলেও কার্যত তার কিছুই হয়নি। শিক্ষা সফরে গিয়ে খুরশীদুল জন্নাত স্কুলের সহকর্মীরাসহ স্মৃতিসৌধে জুতাপায়ে ফটোসেশন করেছেন, যা ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছিল। সেই খুরশীদুলই তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ ধামাচাপা দিতে আমাদেরকে স্বাধীনতা বিরোধী উল্লেখ করার ধৃষ্ঠতা দেখিয়েছেন। খুরশীদুলের উল্লেখিত এ সর্বৈব মিথ্যা অপবাদ তিনি নিজেই স্বাধীনতা বিরোধী হওয়ার নামান্তর বলে তিনি দাবী করেন।তিনি বলেন,আমাদের পারিবারিক ঐতিহ্য এবং আমাদের সামাজিক অবস্থান সম্পর্কে ঈদগাঁওবাসী সম্যক অবগত। আমাদের সম্পর্কে মিথ্যা অপবাদ প্রচারের কারণে আমরা ও ঈদগাঁওবাসী চরমভাবে মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ। আমরা খুরশীদুল জন্নাতের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান রেখেছি। সমালোচিত ও ধুর্ত এ প্রধান শিক্ষকের কৃত অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ করে ঈদগাঁওবাসীর নিকট সকল তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।এমতাবস্থায়, বিদ্যালয়ের প্রায় পৌনে দুই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠা বিতর্কিত ও সমালোচিত প্রধান শিক্ষক খুরশীদুল জন্নাতকে নিয়ে কথিত প্রশংসার ঢাল যেন তার ‘পুকুর চুরি’কে ধামাচাপা না দেয় সেজন্য সাংবাদিকদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।