কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার খুটাখালীইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া গ্রামের ঐতিহ্যবাহী হযরত মাওলানা আবুল ফজল (রাহঃ) এর পরিবারিক মিলনমেলা সম্পন্ন হয়েছে।২৪ এপ্রিল (সোমবার) দুপুরে উপজেলার খুটাখালী সেলিম ফিউচার পার্কে এ মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়।ররিবারের ৫০০ সদস্যের উপস্থিততে আলোচনা, স্মৃতিচারন, স্মরনিকার মোড়ক উন্মোচন, সম্মাননা স্মারক প্রদান ও দুপুরের মধ্যহ্ন ভোজসহ নানা আয়োজনে মিলনমেলা মুখরিত হয়ে উঠে।মিলনমেলার সভাপতিত্ব করেন ফাউন্ডেশন এর সভাপতি আলহাজ্ব ডাঃ ফজলুল কবির।শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন ঢাবি’র শিক্ষার্থী আরমানুল হক।ঈদগাঁও এন ইসলাম জসিম উদ্দিন হোমিও প্যাথিক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ কাজী শওকতুর রহমান ও আধুনগর ইসলামিয়া কামিল মাদরাসার সহকারী অধ্যাপক কাজী মোসাদ্দেক আহমদের যৌথ সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মরহুমের নাতী বাংলাদেশ সরকারের অবঃ সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।তিনি তাঁর বক্তব্য বলেন, এখন সমাজ থেকে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে পারিবারিক বন্ধন। শহর ও গ্রাম- দুটিতেই মানুষগুলো হয়ে যাচ্ছে আত্মকেন্দ্রিক। এমন একটি অবস্থায় পারিবারিক মিলনমেলা করেছে আমাদের পরিবার। পরিবারের প্রায় সব সদস্যকে এক সঙ্গে পেয়ে মনটা ভরে গেছে। ইনশাআল্লাহ আমরা প্রতিবছর এমন আয়োজন করবো। আশা করছি, আমাদের দেখাদেখি অন্যরা এরকম উদ্যোগ নেবেন। কারণ পারিবারিক বন্ধন শক্ত থাকলেই টিকে থাকবে সমাজ।শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার সরকারী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ সোলাইমান। এ সময় তিনি নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, এ মিলনমেলা যেন জন্ম জন্মান্তরের বন্ধন, যা কখনো ছিড়ে যাবে না।অনুষ্ঠানে মরহুমের নাতী কক্সবাজার পিটিআই অবঃ প্রধান শিক্ষক ও ইন্সস্ট্রাকটর মোঃ আমির উদ্দীন খোকন, ডুলাহাজারা উচ্চ বিদ্যালয়ের অবঃ শিক্ষক মোঃ শাহজান, নাইক্ষংছড়ি সরকারী কলেজের অধ্যাপক কেএম মুজিবুর রহমান, চট্টগ্রাম পাচলাইশ শাখার এক্সিম ব্যাংক ম্যানেজার কাজী মোর্শেদ নেওয়াজ ডিকু, বগুড়া অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ কাজী মিজানুর রহমান, মাওলানা আমানুল হক, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক মাওলানা রমিজ আহমদ নুরী, জেলা ও দায়রা জজ আদালত কক্সবাজারের এডভোকেট হেফাজতুর রহমান, মরহুমোর কন্যা মোহসেনা বেগম, হামদর্দ ইউনিভার্সিটির কনসালটেন্ট অধ্যাপক এম ছা’দুল হক, বে বেঙ্গল হ্যাচারির কনসালটেন্ট কাজী মোঃ একরামুল হক স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন।মাওলানা আবুল ফজল ( রাহঃ) স্মনরিকা ও ডাইরেক্টরীর মোড়ক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে সম্পাদক ড. কেএম মাহফজুল করিম বলেন, সবাইকে নিয়ে মিলনমেলা উদযাপন করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। যারা মিলনমেলায় যোগ দিয়ে অনুষ্ঠানকে সফল ও সার্থক করেছেন তাদের সবাইকে পরিবারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তিনি বলেন, আগামী বছরও এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।এসময় খুটাখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের অবঃ প্রধান শিক্ষক কাজী ফরিদুল হক, মর্তুজা বেগম, নারগিছ আরা খানম, হাজেরা বেগম, রাশেদা খানম, রমজান আলী, ফিরোজা খানম পরি, মেম্বার ছলিম উল্লাহ, কাজী আনিচুর রহমান, কেএম জুলকার নাইন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।মিলনমেলায় যোগ দিয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ নারী মরহুমের কন্যা মোহসেনা বেগম বলেন, এখানে এসে অনুভব করছি, আপনজনরা কত কাছের, কত আপনার।মরহুমের নাতী অধ্যাপক কেএম মুজিবুর রহমান বলেন, একান্নবর্তী পরিবার দিন দিন ভেঙেই চলছে এমতাবস্থায় আমাদের বাড়ীর এই পারিবারিক মিলনমেলা সবাইকে একই ফ্রেমবন্দী করেছে ফিরে নিয়েছে শৈশবে। বয়োবৃদ্ধ সকলে যে নিদারুণ সঙ্গ দিয়েছে তা সত্যিই মনোমুগ্ধকর। পারিবারিক মিলনমেলায় অঙ্গীকারবদ্ধ কোন শিক্ষার্থী যেন কমপক্ষে ডিগ্রি পাশ করেন। এ ব্যাপারে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে সব সহযোগিতা করা হবে। ভবিষ্যতে কিছু দিক নির্দেশনার মাধ্যমে এই ফাউন্ডেশনের ভবিষ্যত কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। টআগামীতেও এ রকম আয়োজন করা হবে। আরও বড় পরিসরে এ অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।পরে দেশ-জাতির সুখ সমৃদ্ধি, মিলন মেলার সহযোগীদের মঙ্গল ও মরহুমের আত্নার মাগফেরাত কামনায় মুনাজাত পরিচালনা করেন তমিজিয়া ইসলামিয়া ফাযিল ডিগ্রি মাদরাসার অবঃ শিক্ষক মাওলানা মোফাজ্জল আহমদ। অনুষ্ঠানের শেষে পরিবারের জ্যেষ্ঠ ১৪ জন নারী-পুরুষকে সম্মাননা প্রদান ও স্মরনিকা উপহার তুলে দেয়া হয়।