কক্সবাজারের চকরিয়ায় নতুন পর্যটন জোন ‘নিভৃতে নিসগ’ পাহাড়ের নৈসর্গিক সৌন্দর্য অন্যদিকে পাহাড়ের নীচে বেড়ে চলা মাতামুহুরী নদীর বিশাল জলরাশি গোধুলি বেলায় ভ্রমণ পিপাসুদের মাঝে অন্যরকম দর্শনীয় হয়ে উঠেছে। মাতামুহুরি নদীর কোল ঘেষে পাহাড় বেষ্টনীর অপার সৌন্দর্যের এক লীলাভূমি। পাহাড়-নদীর এই অপরূপ সান্নিধ্য পেতে এখন পার্কে ছুটে যাচ্ছেন ভ্রমণপিপাসুরা।পাহাড় নদীর এই মিতালী স্বচক্ষে উপভোগ করতে এবং প্রকৃতির অপরূপ সানিধ্য পেতে প্রতিদিনই সুরাজপুর-মানিকপুর ছুটে যাচ্ছেন ভ্রমণ পিপাসু সব বয়সের মানুষ। নিভৃৃত নিসর্গ পার্ক এর সাথে যুক্ত হচ্ছে; মানিকপুর সড়কের ‘গুহা, রাখাইন সম্প্রদায়ের মন্দির লম্বা মোড়া পর্যটন, কিউকের প্রাচীনতম গম্বুজ মসজিদ, নদী পথে সূর্যোদয় ও সূর্যোস্থ মোহনা।মাতামুহুরীর কোলঘেঁষে নয়নাভিরাম সৌন্দর্যমন্ডিত নতুন পর্যটন স্পট দুপাশে সু-উচ্চ পাহাড়ের মধ্য দিয়ে আঁকাবাঁকা নদীপথ বয়ে গেছে। নৌকাভ্রমণে কিছুদূর গেলেই চোখে পড়বে শ্বেতপাথরের বিশাল পাহাড়। পর্যটন কেন্দ্রটি খুব অল্প সময়ের মধ্যে দৃষ্টি নন্দন ইকো পার্ক, বিলুপ্ত প্রায় উদ্ভিদ বাগান, কায়াকিং বোট (নৌকা) ও বিভিন্ন ধরনের নৌকার মাধ্যমে নৌ ভ্রমণ সুবিধা, পিকনিক স্পট , ক্যাম্প ফায়ার, তাবুতে রাত্রী যাপনসহ আরো বেশ কিছু রোমাঞ্চকর ইভেন্ট নিয়ে নদী ও পাহাড় বিস্তৃত আধুনিক মানের একটি পর্যটন কেন্দ্র চালুর জন্য উপজেলা প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে।এই খাতে স্থানীয় জনগন ও রাখাইন নৃতাত্বিক জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং অর্থনৈতিক সচ্ছলতা ফিরে আসবে।চকরিয়া শহর থেকে মাত্র ৭ কিলোমিটার পূর্বে পার্কটির অবস্থান। মাতামুহুরী নদীর তীরঘেঁষে পর্যটনকেন্দ্রে একটি পাহাড়ের নামকরণ করা হয়েছে ‘শ্বেত পাহাড়’। সাদা মাটির আকাশছোঁয়া পাহাড়। তার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে আঁকাবাঁকা নদী। সব মিলিয়ে এ পাহাড়টিতে পর্যটকদের কাছেও বেশ পরিচিত হয়ে উঠছে। নদীর তীরে শীতকালীন শাকসবজি, ফলমূল উৎপাদনের পাশাপাশি গড়ে উঠেছে মৎস্য ও পোলট্রি খামার, ব্যবসা-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান ও পর্যটনকেন্দ্র। নদীটির গড় প্রস্থ ১৫৪ মিটার। বর্ষাকালে পাহাড়ি ঢলের কারণে নদীর পানি ফুলে ওঠে, তখন প্রস্থ আরও বেড়ে যায়।চকরিয়া সদরে নেমে আনোয়ার শপিং কমপ্লেক্সের সামনে সিএনজি যোগে পর্যটনে যাওয়া যাবে। সিএনজি ভাড়া জনপ্রতি ৫০টাকা এবং রির্জাভ ভাড়া ২৫০-৩০০ টাকা ।জানা গেছে, বাংলাদেশে এ রকম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা লীলাভূমি দ্বিতীয়টি নেই। যেখানে মেঘালয়ের মতো পাহাড়-পর্বত, সবুজে ঘেরা পাহাড়ের বুকে একাধিক ঝরনাধারা, হিমাচলের শুভ্র মেঘের গালিচা মুহূর্তেই শরীর-মন সতেজ করে দেয়। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্র ও শনি দুই দিন পার্ক ভ্রমণে যাচ্ছেন দৈনিক অন্তত পাঁচ হাজার মানুষ। পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য সেখানে আছে ৬০টির অধিক ছোট–বড় ডিঙি নৌকা। শীতকালে নদীর পানি শুকিয়ে গেছে, তাই লামাবাজার পর্যন্ত যাতায়াত চলছে। বর্ষাকালে পানি বেড়ে গেলে নৌকায় আলীকদম পর্যন্ত যাওয়া সম্ভব হবে। এখন লামা যেতে নৌকাভাড়া (রিজার্ভ) লাগে ১ হাজার ২০০ টাকা। প্রতিটি নৌকায় ওঠেন ১৫-২০ জন।নিভৃতে নিসর্গ পর্যটন কেন্দ্রে নতুন সংযোজন স্পিডবোট। সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম বলেন, ‘সবুজেঘেরা পাহাড় বেষ্টিত আকর্ষণীয় এ পর্যটন স্পটটি পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে পূর্ণাঙ্গ রূপ পেলে দেশের পর্যটন শিল্প বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ পর্যটন জোনকে পর্যটকদের জন্য আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই আলোকে জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে সম্প্রতি পর্যটন জোনের উন্নয়নে কাজ শুরু করা হয়েছে।