বরাবরই আলোকিত মানুষ, আলোকিত সংবাদ ও আলোকিত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে আলোর হাতছানিতে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ, সাথে আলোকিত চকরিয়াও।ছোট বেলায় অন্য দশ জনের মতো স্বপ্ন দেখার সাহস হয়নি তার।স্বপ্নেও হয়তো সে এমন কল্পনা করেননি। অজ পাড়া গাঁয়ে মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেয়া মেয়েটি কখনও বড় স্বপ্ন দেখার সাহস পায়নি। পরিবার তাকে নিয়ে ভাবাত। কিন্তু কে জানত- স্বপ্নহীন এই মেয়েটির জন্য বিধাতা অনেক বড় পরিকল্পনা করে রেখেছিল।গল্পটি খাদিজা আক্তার মাধবী’র।১৫ তম বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস পরীক্ষার মাধ্যমে গত ২৪ জানুয়ারী তারিখে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশন কর্তৃক সহকারী জজ (জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট) হিসেবে নিয়োগের জন্য চুড়ান্তভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছে তিনি।সম্প্রতি বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সুপারিশপ্রাপ্তদের একটি তালিকা থেকে এ তথ্য জানা যায়।খাদিজা আক্তার মাধবী কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড দক্ষিণ ফুলছড়ি গ্রামের মরহুম হাজী ইউসুফ আলীর পুত্র, চট্টগ্রাম সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ খাঁনের স্ত্রী এবং নরসিংদী জেলার বেলাব উপজেলার পোড়াদিয়া গ্রামের সহকারী অধ্যাপক মিজানুর রহমান মিলন ও সরকারী চাকুরীজীবি রুবিয়া আক্তারের বড় কন্যা। তিনি ১ সন্তানের জননী।নরসিংদী জেলার বেলাব উপজেলার পোড়াদিয়া গ্রামের একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম খাদিজা আক্তারের। শিক্ষক বাবার মেয়ে হয়ে বড় স্বপ্ন দেখা তার কাছে আকাশ কুসুম মনে হত। যখন সে হাইস্কুলে পড়তেন তখন তার ভাবনা ছিল মাধ্যমিকের পাঠটুকু চুকলেই বুঝি সফলতা। কিন্তু ভালো ফলাফল করতে থাকে সে।ধীরে ধীরে আত্মবিশ্বাস বাড়ে।মাধবী ২০০৯ সালে পোড়াদিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ২০১১ সালে গাজীপুর সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি, ২০১৬ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি (অনার্স) এবং ২০১৭ সালে একই ইউনিভার্সিটি থেকে এলএলএম ডিগ্রি অর্জন করেন।খাদিজা আক্তার মাধবী আলোকিত চকরিয়া ডট কমকে বলেন, এই সময়টায় আমি ছিলাম পাখির মত উড়ন্ত। জীবনের অর্থ বুঝতে শিখিনি তখনও। কিন্তু এগিয়ে গিয়েছি শুধু। কলেজে উঠে ভেবেছিলাম, ইন্টারমিডিয়েট শেষ হলেই বুঝি বেঁচে যাব। এতেই আমি খুশি।উচ্চাকাঙ্ক্ষাহীন মাধবী ভাবতে থাকে একদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন ও বিচার বিভাগে পড়ার সুযোগ পায়। আইন বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়।খাদিজা আক্তার মাধবী আলোকিত চকরিয়া ডট কমকে বলেন, তার স্বপ্ন ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। পদে পদে প্রতিবন্ধকতা তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। বিভাগে তার ফলাফল দিনদিন ভালো থেকে আরো ভালো হতে থাকে।তার আত্মবিশ্বাস ও স্বপ্ন বড় হতে থাকে।সে ভাবতে সাহস পায় যে সেও বিচারক হতে পারে।এভাবেই স্বপ্নের অঙ্কুরোদগম। আজ সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। বিচারক হিসেবে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছে সে।এই পথচলায় সে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতি। আনন্দে অভিভূত খাদিজা আক্তার মাধবী বলেন, ‘আমার স্বপ্ন এত আকাশছোঁয়া ছিল না। সৃষ্ঠিকর্তার কাছে অনেক শুকরিয়া, তিনি আমাকে এই অর্জনের শক্তি ও বিশ্বাস দিয়েছেন।আমার বাবা-মা’সহ আত্মীয়-স্বজন যারা আমাকে তিলে তিলে করে মানুষ করেছেন তাদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। পাশাপাশি বিভাগের শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষকরা শুরু থেকে আমাকে মেন্টাল এবং লজিক্যাল সাপোর্ট দিয়ে সবসময় পাশে ছিলেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।সহপাঠীদের ধন্যবাদ দিতেও ভোলেনি সে।বিচারক হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার এই সুবর্ণ সুযোগ প্রাপ্তি সম্পর্কে খাদিজা আক্তার মাধবী আলোকিত চকরিয়া ডট কমকে বলেন, নরসিংদী জেলার বেলাব উপজেলার সন্তান হলেও আমার এই সফলতা নিঃসন্দেহে স্বামী চট্টগ্রাম সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ খাঁনের সফলতা।মহান আল্লাহর রহমত ছাড়া আমার পক্ষে এই অর্জন লাভ করা কখনোই সম্ভব হতো না। আজকের এই সফলতার পিছনের গল্পে অনেকের পূর্ণ সমর্থন পেয়েছি।আমার পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, আমার একাডেমিক পর্যায়ের প্রত্যেক শিক্ষক, আমার বিজ্ঞ সিনিয়র, সহপাঠীগণ, বন্ধু-বান্ধব, বড়-ছোট ভাইসহ সকলের সমর্থন অনস্বীকার্য। আমি সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দৃঢ় মনোবল নিয়ে বিচারিক জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত প্রজ্ঞার সাথে নিরলস পরিশ্রম করার জন্য আল্লাহর রহমতের ক্ষেত্রে সকলের দোআ প্রার্থী।খাদিজার এ যাত্রায় আলোকিত চকরিয়া ডট কমের সম্পাদক ও প্রকাশক বি এম হাবিব উল্লাহ সহ পত্রিকার পদস্থ সকল সাংবাদিকরা অভিনন্দন জানাচ্ছেন।
এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।