২০১৮ সালে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীই ইমরান খানকে ক্ষমতায় বসতে পথ তৈরি করে দেয় বলে অভিযোগ উঠে। সেই সময় ইমরান খানের বিরোধী দল অভিযোগ করে, সেনাবাহিনীর সঙ্গে আঁতাত করে নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি করে ক্ষমতায় বসেন ইমরান খান। বিরোধীদলের অভিযোগ ছিল, ইমরান খান সেনাবাহিনীর পুতুল। তবে ক্ষমতার বসার পর সামরিক বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন ইমরান। সেই দ্বন্দ্ব এখন আর গোপন নেই।সম্প্রতি পাকিস্তানের ইতিহাসে নজিরবিহীন এক সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন দেশটির গোয়েন্দা প্রধান। গেল ২৭ অক্টোবর দেশটির শক্তিশালী গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার–সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) প্রধান লেফটেন্যান্ট–জেনারেল নাদিম আনজুম এবং প্রধান সামরিক মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট-জেনারেল বাবর ইফতিখার সংবাদ সম্মেলনে ইমরান খানের বিরুদ্ধে এক প্রকার বোমা ফাটিয়েছেন। জেনারেল নাদিম বলেন, সরকার টেকাতে ইমরান খান সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়াকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সেনাপ্রধান হিসেবে থাকার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। যা বাজওয়া প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। এরপর থেকে সেনাবাহিনীর পেছনে ইমরান লেগেছেন বলে দাবি করেন নাদিম। এদিকে আগাম নির্বাচনের দাবিতে ২৮ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া লংমার্চে সামরিক বাহিনীর নেতৃত্বের প্রতি ঝাঁঝালো বক্তৃতা দিতে থাকেন ইমরান। তিনি সংবাদ সম্মেলনকে ‘রাজনৈতিক’ বলে আইএসআই প্রধানকে অভিযুক্ত করেন। একইসঙ্গে দলের এক নেতাকে নির্যাতনের জন্য তাদের অভিযুক্ত করেছেন ইমরান খান। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী নাদিম আনজুমকে সতর্ক করে বলেন, তিনিও অনেক গোপন কিছু জানেন, কিন্তু দেশ ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে আমি চুপ আছি। এরপরেই গত বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) ইমরান খানের লং মার্চে ঢুকে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এতে ইমরান খান গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত হয়েছেন তার দলের আরও বেশ কয়েকজন নেতা। নিহত হয়েছেন দলের এক কর্মী। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর প্রথমবারের মতো গতকাল শুক্রবার মুখ খুলেছেন পিটিআই প্রধান। তিনি অভিযোগ করেছেন, তাকে হত্যা চেষ্টার পেছনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এবং মেজর জেনারেল ফয়সাল জড়িত।পিটিআই প্রধানের এমন অভিযোগের পরেই কড়া ভাষায় তা প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। ইমরানের এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। ইমরান খানের এমন অভিযোগ, ক্ষমতাসীনদের অবস্থান দেশটির রাজনীতি ঘোর অন্ধকারের দিকে যাচ্ছে বলে বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন। এছাড়া দেশজুড়ে রাজনীতিতে বিভক্তি ছড়িয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে ইমরানের ওপর হামলায় প্রতিবাদে পাকিস্তানজুড়ে সহিংস বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। দেশটির প্রভাবশালী পত্রিকা ডনের এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের রাজনীতি আরও ঘৃণা ও সহিংসতার পথে। ভঙ্গুর অর্থনীতি সেই সঙ্গে সাম্প্রতিককালে ভয়াবহ বন্যায় বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি, রাজনৈতিক অচলাবস্থা- সবমিলিয়ে পাকিস্তানের সামনে থেকে সহসাই ঘোর কালো মেঘ কাটছে না।
এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।